দাদু নেই আর

 শৈশবে যার হাত ধরে, যার আদরে বেড়ে উঠি, যদি আমার জীবনকালের একমাত্র সুখের স্মৃতির পাতা কেউ আমাকে খুঁড়ে আনতে বলে তাহলে একটা মাত্র নাম আমার মন থেকে ওঠে আসবে, - দাদু। আমার বাপের বাপ। দাদুর মৃত্যুর পর পৃথিবীতে আজ দাদু বিহীন একটি দিন। . সম্পর্কের সূতোর মতো এমন অভেদ্য সূতো জগতে আর একটিও নেই। ভালোবাসা বুকের নিবিড় জমিনে বেড়ে উঠে সযত্নে। আমাদের সম্পর্ক একদম নাভীমূল থেকে উৎসারিত ছিলো এই সত্যটুকু আমরা জানি দাদু, তাই তোমার অস্তিত্বহীনতা নিয়ে আমার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ভালোবাসাতো পাত্র বিচারে হয়না, উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতিও মুখ্য নয়। ভালোবাসা ভালোবাসারই মত চিরন্তন বহতা নদীর স্রোত—সে জানে না নদীর অপারগতা কিংবা চরের দুর্দণ্ড প্রতাপশালী মনোভাব। ভালোবাসা কেবল বহিয়াই চলে, কেবল বহিয়াই চলে। . কেউ যেনো ভুল করেও তোমার উপর বিরক্ত না হয় এরকম একটা দিনে তুমি নিজেকে গুটিয়ে নিলে—একেবারে চুপচাপ, কাউকে তোমার কষ্ট বুঝার আক্ষেপটুকু পর্যন্ত না দিয়ে। কে জানে, পিছে আবার কে বিরক্ত হয় তোমার শেষবেলাতে? জগতে তুমিতো কম দেখোনি মানুষের প্রতাপী মুখ। তোমার গর্ভের সন্তানেরা পর্যন্ত তোমাকে কম শেখায়নি, দাদু। তুমি একদম বুদ্ধিমানের ম...

ছেলেবেলা

ছোটবেলায় খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে হাতে-পায়ে কেটে যায়নি এমন মানুষ পাওয়া যাবে না।ছোটবেলার ব্যাথার দাগটা এই বড় বেলায় এসেও হাঁটু বা কনুইয়ে খুঁজে পাওয়া যায়। কিংবা সেবার প্রথম রান্না করতে গিয়ে যে হাত পুড়ে গেলো, সে দাগটা হয়তো হাতের উপর এখনো রয়ে গেছে। প্রথমবারের সেই রান্নার স্বাদ যেমনই হোক, সেই ভালো লাগার অনুভূতিটা কিন্তু মনে এখনো তাজা রয়ে গেছে। ছোটবেলার খেলার স্মৃতি এখনো মনকে স্মৃতিকাতর করে তোলে। কারণ সময় চলে যায় কিন্তু স্মৃতি কখনো পুরোনো হয় না। তবে খারাপ লাগে তখন যখন থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পড়তে গেলে পায়ের দাগটা চোখে লাগে, যখন অন্য কেউ হাতের দাগটা দেখে জিজ্ঞেস করে- এটা কিসের দাগ,এমন কিভাবে হলো?

তখন অনেকেই খুব অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে যান। দাগটা ঢেকে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এখানে লজ্জা পাওয়ার বা সংকোচের কিছুই নেই। এই দাগগুলো আপনার একেকটা স্মৃতির সাক্ষর। এমন কিছু দাগ হতেই পারে। কেউ নিখুঁত না। হওয়া সম্ভবও না।

কিছু ক্ষতচিহ্ন যদিও কিছু ক্রিমের ব্যাবহারে মিটিয়ে ফেলা যায় তবুও কিছু দাগ কখনোই মিটে না। সেক্ষেত্রে অস্বস্তিতে ভোগার কিছুই নেই। আপনি কি আপনার ছোটবেলার খেলাধুলার জন্য আফসোস করতে চান? আপনার কি মনে হয় যে না খেললেই ভালো হতো, দাগ পড়তো না । অথবা, সেবার রান্না না করতে গেলেই ভালো হতো! কখনো এমন মনে হয়? যদি আপনার উত্তর না হয়ে থাকে তবে এই আঘাত চিহ্নগুলো নিয়েও মন খারাপ করবেন না। বরং কেউ জিজ্ঞেস করলে নিজ থেকে বেশ মজা নিয়েই বলুন এটা কিভাবে হলো। দেখবেন শ্রোতাও তার কোনো স্মৃতি আপনার সাথে শেয়ার করবে। কারণ সবার সাথেই এমন কিছু হয়। সবার জীবনেই এমন ঘটনা আছে। তাই এখানে লজ্জা পাওয়ার বা সংশয়ে থাকার কিছুই নেই।

Comments

Popular posts from this blog

ব্যথার আদরে অবুঝ আঙুল রাখলাম

দাদু নেই আর

ভালবাসার গুরুত্ব