Posts

Showing posts from March, 2021

দাদু নেই আর

 শৈশবে যার হাত ধরে, যার আদরে বেড়ে উঠি, যদি আমার জীবনকালের একমাত্র সুখের স্মৃতির পাতা কেউ আমাকে খুঁড়ে আনতে বলে তাহলে একটা মাত্র নাম আমার মন থেকে ওঠে আসবে, - দাদু। আমার বাপের বাপ। দাদুর মৃত্যুর পর পৃথিবীতে আজ দাদু বিহীন একটি দিন। . সম্পর্কের সূতোর মতো এমন অভেদ্য সূতো জগতে আর একটিও নেই। ভালোবাসা বুকের নিবিড় জমিনে বেড়ে উঠে সযত্নে। আমাদের সম্পর্ক একদম নাভীমূল থেকে উৎসারিত ছিলো এই সত্যটুকু আমরা জানি দাদু, তাই তোমার অস্তিত্বহীনতা নিয়ে আমার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ভালোবাসাতো পাত্র বিচারে হয়না, উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতিও মুখ্য নয়। ভালোবাসা ভালোবাসারই মত চিরন্তন বহতা নদীর স্রোত—সে জানে না নদীর অপারগতা কিংবা চরের দুর্দণ্ড প্রতাপশালী মনোভাব। ভালোবাসা কেবল বহিয়াই চলে, কেবল বহিয়াই চলে। . কেউ যেনো ভুল করেও তোমার উপর বিরক্ত না হয় এরকম একটা দিনে তুমি নিজেকে গুটিয়ে নিলে—একেবারে চুপচাপ, কাউকে তোমার কষ্ট বুঝার আক্ষেপটুকু পর্যন্ত না দিয়ে। কে জানে, পিছে আবার কে বিরক্ত হয় তোমার শেষবেলাতে? জগতে তুমিতো কম দেখোনি মানুষের প্রতাপী মুখ। তোমার গর্ভের সন্তানেরা পর্যন্ত তোমাকে কম শেখায়নি, দাদু। তুমি একদম বুদ্ধিমানের ম...

কষ্টের দিনলিপি

Image
তোমার কাছ থেকে সজ্ঞানেই দূরে থাকি। তোমাকে না দেখেই দিনটা কাটাবার চেষ্টা করি। আমাকে তুমি চাও না, তাতে আমার আক্ষেপ নেই। আক্ষেপ একটাই, তুমি কখনো বুঝতে চাইলে না কতোখানি ভালোবাসি তোমাকে। . বেশী কাছাকাছি হলে কি সস্তা হয়ে যায় প্রেম? তাই কি বিব্রত করে তোমাকে? যখন তোমার কাছ থেকে দূরে থাকি, যখন তোমাকে না দেখে থাকি, তখন তুমি সুস্থ থাকো, ভালো থাকো, আনন্দে থাকো, জয়ী থাকো। কোন কোন প্রেম অভিশপ্ত হয় শুনেছি, আমারো কি তাই? প্রায়শ্চিত্ত পন্থা অজানা বলে কখনো সেই অভিশাপ কাটিয়ে ওটা হয়নি। . আমি তাই সজ্ঞানেই তোমার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকি। জানি তুমি অভিমান করো। আমাকে ভুল বোঝো। আরো জানি আমাকে আকাংখা না করলেও আমার জন্য প্রতীক্ষা করো খুব গোপনে। তোমার মঙ্গল বয়ে আনতে পারবো না জেনেও কখনো কখনো আমাকে তোমার পাশে দেখতে চাও। তোমার গোপন আকাংখা আমি জানি বলেই মাঝে মাঝে তোমার কাছে গিয়ে খানিকক্ষণ বসে আসতে চাই। কিন্তু যখনই বসি তখনই ঘটে বিপর্যয়। সেদিনও যেমন ঘটেছিল। খুব বিব্রত হয়ে পালিয়ে এসেছিলাম সেদিন। . আজও তোমার কাছ থেকে সারাদিন দূরে দূরেই থাকি। দুয়েকবার স্বেচ্ছা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উঁকি মেরেও ফিরে এসেছি হোয়াটস এফ...

রাগ, অনুরাগ

 মাঝে মধ্যে হুটহাট করে আবিষ্কার করি, অমুক মানুষটা আর ফ্রেন্ডলিস্টে নেই। আগে একটু খারাপ লাগতো, অবাক লাগতো, কারণটা কি হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে কারণ বুঝতে পারতাম, কিছু ক্ষেত্রে অনুমান করতে পারতাম, কিছু ক্ষেত্রে কল্পনা করে নিতে হতো কারণটা কি হতে পারে। অনেক সময় আইডি হ্যাক হওয়া বা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণেও এরকম ঘটে থাকে। সময়ের সাথে ধীরে ধীরে ম্যাচিউর হতে থাকি। এসব আর গায়ে লাগে না এখন। কারণ, জ্বলজ্যান্ত মানুষই দুনিয়া থেকেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে। রোড এক্সিডেন্টে, পানিতে ডুবে, হার্ট এটাক করে, ব্রেইন স্ট্রোক করে, কত স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক কারণে, নিজের সমবয়সী থেকে শুরু করে, বিভিন্ন বয়সের কাছের বা দূরের মানুষকে মরতে দেখে আসছি। ফেসবুকে কে, কি মনে করে আনফ্রেন্ড করে দিলো; কিংবা কে রিয়েল লাইফে, কিসের ভিত্তিতে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলো, আমাদের জীবনের সামগ্রিক বিবেচনায় সেসব খুবই তুচ্ছ ব্যাপার। জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- আমাদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য; আর কিছুই না। সমাজ না, গুষ্ঠি না, বংশ না, পাড়াপ্রতিবেশি না; "আপনি ঠিক তো জগত ঠিক"। . ভবিষ্যত...

বিরহ তলফ

Image
 বিশাল আকাশের নিচে দুজনেই আছি অথচ আমাদের দেখা হয় না। মোবাইল কন্টাক্ট এর পছন্দের লিস্টে সবার প্রথম যে নম্বরটা সেটায় ফোন দেয়া হয় না। আরও অনেক কিছুই হয় না আমাদের। গভীর প্রনয়, মান অভিমানের পালা, দেখা করার জরুরি তলফ কিংবা ঘুম ঘুম চোখে রাত জেগে কথা বলার স্বভাব কিছুই হয় না আমাদের। ছোটলোকি পনা অনেক করেছি নিজের ব্যক্তিত্ব কে বিসর্জন দিয়ে নির্লজ্জ উপাধি পেয়েছি, তাই এখন আর তোমায় ফোন দেই না। একদিন হুট করে চলে এসো, আর যাই হোক ভালোবাসাবাসির আদিখ্যেতা না থাকলেও অতিথি আপ্যায়ন করব। তোমায় সেই সব যায়গায় নিয়ে যাব যেখানে গেলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। তবে আমার প্রতিদিন যাতায়াতের পথ তোমায় চেনাবো না। কারন শূন্য বুকে রেখে যাবার পরে রাস্তা যেন তোমার স্মৃতি আঁকড়ে ধরতে না পারে সেই দায়!

মায়াবতী

Image
 জানিস তো, ব্যবহার করা কপালের টিপটার আঠা নষ্ট হলেও মেয়েরা সেটা যত্ন করে রেখে দেয়। একজোড়া কানের দুলের একটা হারিয়ে গেলেও অন্যটা ফেলে না। পুরাতন শাড়িটা ভাঙা চুড়িটা.. কাজে লাগবেনা জেনেও তুলে রাখে..কারণ হলো মায়া। মেয়েরা মায়ার টানে ফেলনা জিনিসও ফেলে না। অসংখ্য কষ্ট যন্ত্রণা পেয়েও মেয়েরা মায়ারটানে একটা ভালোবাসা, একটা সম্পর্ক, একটা সংসার টিকিয়ে রাখতে চায়। এই জন্য মেয়েরা মায়াবতী আর মায়াবতীর কোন পুরুষবাচক শব্দ নেই। আমি তর মাঝে এটা দেখি । কোনো প্রতিজ্ঞার ঘেরাটোপ নয়,মাথার দিব্যি নয়,গড প্রমিস নয়,তর নিত্যদিনের সব ভাবনায় হোক আমার বাস। কোনো প্রমিস করবো না কখনো,কথা দেব না কতদিন থাকবো একসাথে। আকুতি করবো না মনমন্দিরে স্থান পেতে, বলবো না পাশে থাকবো আজীবন শুধু বলবো,আমৃত্যু অস্তিত্বে মিশে থাকতে চাই ততে। বৌয়ের মত এত কাছের বন্ধু কেউ হয় না রে। আমি জানি, আমার ছেলেমানুষী, আমার বোকামি, আমার ভূলগুলি, আমার ঘটে যাওয়া দূর্ঘনা, আমার বর্তমান অবস্থা, আমার ভবিষ্যৎ; সবকিছু চোখবুঁজে মেনে নিবে, আর বলবে ওসব নিয়ে ভেবোনা তো। আমার সবকিছু মেনে নিয়ে একান্তই তর করে নিবে। আর এজন্যই তকে অনেক বেশি আপন ভাবি। ...

ব্যথার আদরে অবুঝ আঙুল রাখলাম

Image
  প্রিয়তা, অজস্র অবসর অন্তহীন ভুলের সামনাসামনি দাঁড় করিয়ে দেয় অবলীলায়। পৃথিবী যখন সকালের কফি কিংবা রাতের ঘুমে ডুবে যায়; আমি ফিরে যাই সেইসব দিনগুলোতে, যেখানে আমরা পরস্পরের কাছে খুঁজে পেয়েছিলাম স্বাচ্ছন্দ্য আর সুখ। তোমার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে বরফের মতো জমে যাওয়া সোনালি সময়ের বিন্দু! যেমন বর্নিল, তেমনই মূল্যবান। মনের গহীন কোণে যেখানে সমস্ত অযাচিত অনুভুতিকে লুকিয়ে রাখি সেগুলো জীবনের একএকটি নিজস্ব মুহূর্ত। . তোমার কথা ভেবে অপেক্ষার প্রতিশব্দ হয়ে গেছি। নিজের জীবনে তুন্দ্রার মতো নির্জন হয়ে বেঁচে আছি। আমি স্বার্থের কাকের মত আচরণ করেছি, কোকিলের মতো চালাকি করেছি, অথচ আমার বাবুই পাখি হওয়ার কথা ছিলো। ভালোমানুষ হয়ে জন্ম নিতে হয় প্রিয়তা, ভালমানুষ কেউ হয়ে উঠতে পারেনা। আমার বর্তমান; জীবনান্দের কবিতার মতোন বিষাদময়। নদীভাঙ্গায় বাড়িঘর হারানোদের মত ভাগ্যবিড়ম্বিত। ব্যক্তিজীবনের নিঃসঙ্গতায়, অদ্ভত নির্ল্পিপ্ততায়, বাস্তবতার বেড়াজালে বন্দী। জমাট ব্যথার মত অসহ্য জীবনযাপন। সুপারনোভা যেমন আয়ুষ্কালের শেষপ্রান্তে এসে কৃষ্ণগহবরে রূপান্তরিত হয়; তেমনি নিদারুণ খরার একটা খটখটে জীবনে তুমি আমার নিজস্...