অন্তহীন পথ
- Get link
- X
- Other Apps
পূর্ণিমা রাতে জোনাকির রঙ গায়ে মেখে জোসনার আলো খেতে খেতে চাঁদ দেখা আমার সখ। গায়ে গা ঘেষে পাশে বসে হাতে হাত রেখে তুমি প্রথম যেদিন বলেছিলে ’’ভালোবাসি, ভালোবাসি আমি তোমাকে ভালোবাসি’ সেদিন থেকে। অধরে অধর চুম্বনের অপেক্ষায় লাল হয়ে যাওয়া গাল আর লজ্জ্বায় লুকিয়ে ছিলে মুখ আমার বুকের ভেতর। সেদিন ছিলো পূর্ণিমার ভরা যৌবন। আকাশে হাসছিলো একফালি মায়াবি চাঁদ। নীশিত নীলিমার কপালে যেনো এক রূপালী টিপ। ঝোপের আড়ালে বসেছিলো জোনাকির মেলা,
আলোর মিছিল। আলো আধারের ছায়া এসে পড়েছিলো গায় । দূর থেকে গাছের ছায়াগুলো মনে হচ্ছিলো যেনো অভিসারে চলছে মানব মানবীর প্রেম। সাথে ছিলো মন মাতানো, বুক জুড়ানো সুশীতল বাতাস। এতো শতো কোনো কিছুতেই ভ্রূক্ষেপ ছিলো না তোমার। কোথায় যেনো নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলে তুমি। মগ্নতায় গ্রাস করেছিলো তোমার অস্তিত্ব। পরম নিশ্চিন্তে আমার বুকে মাথা রেখে খুঁজে পেয়েছিলে যেনো একদণ্ড সুখের ঠিকানা। বেলি ফুলের সুবাস আমাকে খুব কাছে টানে। মুহিত হই। কখনো কখনো মাতাল করে। আমি ঘ্রাণ নিই মগ্ন হয়ে। নিজেকে হারিয়ে ফেলি স্মৃতির মোহনায়। মনে পড়ে যায় সেই ক্ষণের কথা, যে ক্ষণ ছিলো শুধু তোমার আমার। এক এক করে বেলি ফুলের মালা গেঁথে পরিয়েছিলাম তোমার চুলের খোঁপায়। আমি মুগ্ধ নয়নে চেয়ে আছি তো চেয়ে আছি তোমার সেই খোঁপার দিকে মানে তোমার দিকে। সদ্য প্রস্ফুটিত একটি গোলাপ ছিড়ে তোমার খোঁপায় গুজে দেবো বলে যেই না হাত দিলাম গোলাপে অমনি বিঁধলো কাঁটা আঙুলে। একাকার হয়ে গেলো রক্ত আর গোলাপের পাপড়ি। রক্তমাখা আঙুল মুখে নিয়ে তুমি চুষে নিয়েছিলে আমার সমস্ত কষ্ট। কাঁটা ফুটেছি, রক্ত ঝরেছে, তাতে কী, ব্যথা তো পাই নি। পেয়েছিলাম তোমার ভালোবাসা। ছাদের টবে লাগানো ফুলের গাছে কতোদিন ধরে পানি দিচ্ছিলাম, যত্নআর্তি করছিলাম কেবল এই দিনটির আশায়। শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাসে নগ্ন পায়ে চাঁটতে আমার খুব ভালো লাগে। যেদিন তুমি নুপুরের রিনিঝিনি শব্দে শিশির ভেজা ঘাসে জড়ানো গ্রামের মেঠো পথ বেয়ে হাতে হাত ধরে পথ চলতে চলতে ভালোবাসার কথা বলেছিলে, সেদিন থেকে। প্রেমাতুর শিশির সেদিন চুমো খাচ্ছিলো তোমার তুলতুলে নগ্ন দুটি পায়। আর তারই স্পর্শে তোমার চোখে মুখে ছিলো প্রেমানু্ভুতির দীপ্ত আভা। আমি দেখে দেখে মুগ্ধ ছিলাম তোমার সেই নগ্ন দুটি পা। কুয়াশায় সিক্ত শিশিরের আদরে আদরে সিক্ত হলে তুমি। বিকেলের আবিরে বৃষ্টিতে ভিজতে আমার ব্যাকুল করে হৃদয় । যেদিন বাসার ছাদে বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজছিলাম দু’হাত মেলে,
হাতের তালুতে বৃষ্টির পানি নিয়ে ভিজিয়েছিলাম দুজন দুজনার মন,
সেদিন থেকে। ভেজা শরীরের লজ্জায় মুখ লুকিয়েছিলো বাড়ির চারপাশের গুবাকতরুর সারি। কার্নিশে বাস করা পায়রাগুলো ডানা দিয়ে বৃষ্টির কবল থেকে বাচিয়ে রেখেছিলো তার নবজন্মা ছানাগুলো। আর আমাকে মুগ্ধ করেছিলো বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর তোমার গালে জমে থাকা এক ফোঁটা জল। যা আমি টপ করে আঙুলের মাথায় নিয়ে পুরিয়ে দিয়েছিলাম মুখে। নিয়েছিলাম তোমার ভালাবাসার স্বাদ। যে স্বাদ আমি এখনো মুখে নিয়ে চলি। কখনো কখনো একা থাকতে মন আমাকে প্রলুব্ধ করে। চুপচাপ একাকি। আবার কখনো আপন মনে নিজের সাথে নিজেরই কথা বলি । আসলে যখন আমি একাকি থাকি তখন একাকি থাকি না। আমার সাথে থাকো তুমি। আমি কথা বলি নিজের সাথে কখনো তোমার সাথে। অশরীরি প্রেমাত্মার সাথে। কথা বলি জীবনের কথা, সুখ দুঃখের কথা, হাসির কথা, রসের কথা, প্রেমের কথা। কবিতা লিখি তোমাকে নিয়ে, গল্প সাজায়,
আবার কখনো গান বাঁধি। ভালোবাসার গান। তবুও কোথায় যেনো শূন্য হৃদয়, হাহাকার করে তোমাকে কাছে পাওয়ার আকুলতায়। তোমাকে ভালোবাসি,
শামু আমি তোমাকে ভালোবাসি বলেই প্রতিটি মুহূর্তে মিস করছি তোমায়।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment